রবীন্দ্রনাথের অনুবাদকর্ম
মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
বহুভাষাবিদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যচর্চায় অনুবাদকর্ম একটি বড় স্থান অধিকার করে আছে। অনুবাদ ছাড়াও তাঁর রূপান্তরকর্ম ছিল বেদ সংহিতা, উপনিষৎ, ধম্মপদ, যুগ্মগাথা, অপ্পমাধবগগো, চিত্তবগগো, পুপফবগগো, মহাভারতের মনুসংহিতার অংশবিশেষ, কালিদাস-ভবভূতি, ভট্টনারায়ণ-বরবুনি প্রমুখের লেখা, পালি-প্রাকৃত কবিতা, মরমী কবি তুকারাম, মধ্যযুগের হিন্দি কবিতা, শিখ ভজন, বিদ্যাপতির মৈথিলী রচনা, সংস্কৃত, গুরুমুখী ও মরাঠি রচনার থেকে।
ইউরোপীয় সাহিত্যে ভিকতর উগো, শেলি, আর্নেসট মায়ার্স, অব্রে দ্য ভের, পি বি মার্স্বন, মুর, মিসেস ব্রাউনিং, ক্রিসিটনা রসেটি সুইন বার্ন, হুড এবং জর্মন ভাষায় হাইনরেখ হাইনে ও গ্যেটের কিছু লেখার তিনি অনুবাদ করেন। একটি জাপানি কবিতার ইংরেজি অনুবাদ থেকে তিনি বাংলা তর্জমা করেন।
৫ মাঘ ১২৯১ সালে কলকাতার সিটি কলেজে রাজা রামমোহন রায়ের স্নরণার্থ সভায় পঠিত এক বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘বাস্তবিক একটু ভাবিয়া দেখিলেই দেখা যায়, জ্ঞানের কথায় আর ভাবের কথায় একনিয়ম খাটে না। জ্ঞানের কথাকে ভাষান্তরিত করিলে তাহার তেমন ক্ষতি হয় না, কিন্ত- ভাবের কথাকে ভাষাবিশেষ হইতে উৎপাটিত করিয়া তাহাকে ভাষান্তরে রোপণ করিলে তাহার স্কূর্তি থাকে না, তাহার ফুল হয় না, ফল হয় না, সে ক্রমে মরিয়া যায়।’
ধম্মবাদং-এর বঙ্গানুবাদের গ্রন্থ আলোচনায় ১৩১২ সালের জ্যৈষ্ঠে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘অনুবাদ যদি স্থানে স্থানে ব্যাখ্যার আকার ধারণ করে তবে অন্যায় হয়, কারণ, ব্যাখ্যায় অনুবাদকের ভ্রম থাকিতেও পারে-এ জন্য অনুবাদ ও ব্যাখ্যা স্বতন্ত্র রাখিয়া দিলে পাঠককে বিচার করিবার অবকাশ দেওয়া হয়। মূলের যে-সকল কথার অর্থ সুসপষ্ট নহে অনুবাদে তাহা যথাযথ রাখিয়া দেওয়াই কর্তব্য মনে করি।’
১৯১৭ সালে বাংলা থেকে ইংরেজি এবং ইংরেজি থেকে অনুবাদ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ দুখণ্ড বই লেখেন। অনুবাদচর্চা (১৯১৭) গ্রন্থের ভূমিকায় তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস যদি যথোচিত অধ্যবসায়ের সঙ্গে অন্তত দুই বৎসর কাল এই অনুবাদ প্রত্যনুবাদের পন্থা ধরে ভাষাব্যবহারের অভ্যাস ঘটানো যায়, তা হলে ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষাতেই দখল জন্মানো সহজ হবে।
‘দুই সমপূর্ণ বিভিন্ন ভাষার মধ্যে কথায় কথায় অনুবাদ চলতেই পারে না। ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষায় প্রকাশের প্রথা স্বতন্ত্র এবং পরসপরের মধ্যে শব্দ ও প্রতিশব্দের অবিকল মিল পাওয়া অসম্ভব, এই কথাটি তর্জ্জমা করতে গিয়ে যতই আমাদের কাছে ধরা পড়ে ততই উভয় ভাষার প্রকৃতি সপষ্ট করে বুঝতে পারি। এই জন্যে অনুবাদের যোগে বিদেশী ভাষাশিক্ষার প্রণালীকে আমি প্রশস্ত বলে মনে করি।’
হেমেন্ত বালা দেবীকে লিখিত এক পত্রে রবীন্দ্রনাথ বলেন, “অনুবাদচর্চ্চা’ বলে আমার দুখণ্ড বই আছে, একটা ইংরেজি একটা বাংলা সেই দুটো অবলম্বন করে তুমি এবং খুকু প্রত্যহ যদি তর্জ্জমা অভ্যাস করে যাও, তাহলে ইংরেজি শেখার কাজে লাগবে। বইখানা হাতের কাছে থাকলে তোমাকে পাঠিয়ে দিতুম। মূল্য সামান্য কিন্ত- তার উপযোগিতা তার চেয়ে অনেক বেশি-দোষ নিয়ো না, নিজের কীর্ত্তি ঘোষণা করার প্রয়োজন হলে সেটা করা কর্তব্য।”
গীতাঞ্জলির ইংরেজি তর্জমা সমপর্কে ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণীকে লিখিত এক পত্রে রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ওটা যে কেমন করে লিখ্লুম এবং কেমন করে লোকের এত ভাল লেগে গেল, সে কথা আমি আজ পর্যন্ত ভেবেই পেলুম না। আমি যে ইংরেজি লিখতে পারি নে, এ কথাটা এমনি সাদা যে এ সম্বন্ধে লজ্জা করবার মত অভিমানটুকুও আমার কোনো দিন ছিল না।
“যদি আমাকে কেউ চা খাবার নিমন্ত্রণ করে ইংরেজিতে চিঠি লিখ্ত, তাহলে তার জবাব দিতে আমার ভরসা হত না। তুই ভাবছিস আজকের বুঝি আমার সে মায়া কেটে গেছে-একেবারেই তা নয়-ইংরেজিতে লিখেছি এইটেই আমার মায়া বলে মনে হয়। গেলবারে যখন জাহাজে চড়বার দিনে মাথা ঘুরে পড়লুম, বিদায় নেবার বিষম তাড়ায় যাত্রা বন্ধ হয়ে গেল, তখন শিলাইদহে বিশ্রাম করতে গেলুম। কিন্ত- মস্তিষক ষোলো আনা সবল না থাকলে একেবারে বিশ্রাম করবার মত জোর পাওয়া যায় না, তাই অগত্যা মনটাকে শান্ত রাখবার জন্যে একটা অনাবশ্যক কাজ হাতে নেওয়া গেল। তখন চৈত্র মাসে আমের বোলের গন্ধে আকাশে আর কোথাও ফাঁক ছিল না এবং পাখীর ডাকাডাকিতে দিনের বেলাকার সকল কটা প্রহর একেবারে মাতিয়ে রেখে ছিল। ছোট ছেলে যখন তাজা থাকে তখন মার কথা ভুলেই থাকে, যখন কাহিল হয়ে পড়ে তখনি মায়ের কোলটি জুড়ে বসতে চায়-আমার সেই দশা হল। আমি আমার সমস্ত মন দিয়ে আমার সমস্ত ছুটি দিয়ে চৈত্র মাসটিকে যেন জুড়ে বসলুম-তার আলো তার হাওয়া তার গন্ধ তার গান একটুও আমার কাছে বাদ পড়ল না। কিন্ত- এমন অবস্থায় চুপ করে থাকা যায় না-হাড়ে যখন হাওয়া লাগে তখন বেজে উঠতে চায়, ওটা আমার চিরকেলে অভ্যাস, জানিসত। অথচ কোমর বেঁধে কিছু লেখবার মত বল আমার ছিল না। সেই জন্যে ঐ গীতাঞ্জলির কবিতাগুলি নিয়ে একটি একটি করে ইংরেজিতে তর্জ্জমা করতে বসে গেলুম। যদি বলিস, কাহিল শরীরে এমনতর দুঃসাহসের কথা মনে জন্মায় কেন-কিন্ত- আমি বাহাদুরি করবার দুরাশায় এ কাজে লাগি নি। আর একদিন যে ভাবের হাওয়ায় মনের মধ্যে রসের উৎসব জেগে উঠে ছিল সেইটিকে আর একবার আর এক ভাষার ভিতর দিয়ে মনের মধ্যে উদ্ভাবিত করে নেবার জন্যে কেমন একটা তাগিদ এল। একটি ছোট খাতা ভরে এল। এইটি পকেটে করে নিয়ে জাহাজে চড়লুম। পকেটে করে নেবার মানে হচ্ছে এই যে, ভাবলুম সমুদ্রের মধ্যে মনটি যখন উস্খুস্ করে উঠবে তখন ডেক চেয়ারে হেলান দিয়ে আবার একটি দুটি করে তর্জ্জমা করতে বসব। ঘট্লও তাই। এক খাতা ছাপিয়ে আর এক খাতায় পৌঁছন গেল। রোটেনসটাইন আমার কবিযশের আভাস পূর্বেই আর একজন ভারতবর্ষীয়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তিনি যখন কথা প্রসঙ্গে আমার কবিতার নমুনা পাবার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন, আমি কুণ্ঠিতমনে তাঁর হাতে আমার খাতাটি সমর্পণ করলুম। তিনি যে অভিমত প্রকাশ করলেন সেটা আমি বিশ্বাস করতে পারলুম না। তখন তিনি কবি য়েটসের কাছে আমার খাতা পাঠিয়ে দিলেন-তারপরে কি হল সে ইতিহাস তোদের জানা আছে। আমার কৈফিয়ত থেকে এটুকু বুঝতে পারবি আমার কোনো অপরাধ ছিল না-অনেকটা ঘটনাচক্রে হয়ে গেছে।”
২৯ আগসট ১৯৩৯ ‘গ্রন্থকাব্যে’ রবীন্দ্রনাথ বলেন ‘একদা কোনো-এক অসতর্ক মুহূর্তে আমি আমার গীতাঞ্জলি ইংরেজি গদ্যে অনুবাদ করি। সেদিন বিশিষ্ট ইংরেজ সাহিত্যিকেরা আমার অনুবাদকে তাঁদের সাহিত্যের অঙ্গস্বরূপ গ্রহণ করলেন। এমন-কি, ইংরেজি গীতাঞ্জলিকে উপলক্ষ করে এমন-সব প্রশংসাবাদ করলেন যাকে অত্যুক্তি মনে করে আমি কুণ্ঠিত হয়েছিলাম। আমি বিদেশী, আমার কাব্যে মিল বা ছন্দের কোনো চিহপ্তই ছিল না, তবু যখন তাঁরা তার ভিতর সমপূর্ণ কাব্যের রস পেলেন তখন সে কথা তো স্বীকার না করে পারা গেল না। মনে হয়েছিল, ইংরেজি গদ্যে আমার কাব্যের রূপ দেওয়ার ক্ষতি হয়নি, বরঞ্চ পদ্যে অনুবাদ করলে হয়তো তা ধিক্কৃত হত, অশ্রদ্ধেয় হত।’
১৯২১ সালে এডওয়ার্ড টমসনকে লেখা একটা চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘আমার অনুবাদে আমি ভীরুর মতো সব সমস্যা এড়িয়ে গিয়েছিলাম, ফলত সেগুলো শীর্ণ হয়ে গেছে। যখন আমি আমার নিজের টাকা নিয়ে এই জালিয়াতি শুরু করেছিলাম, তখন সেটা ছিলো খেলার মতো, কিন্ত- এখন তার বিপুল পরিমাণ দেখে আমি শঙ্কিত হয়ে পড়ছি। এখন আমি চাই বাংলা ভাষার কবি হিসেবে আমার মৌলিক কাজের মধ্যে গুটিয়ে যেতে। আশা করি ক্ষতি-পূরণের পক্ষে বড্ড বেশি দেরি হয়ে যায় নি।’
‘আমার অনুবাদে যে-সব ফাঁক আছে, ফাটল আছে, সেগুলোকে ঢেকে দেবার জন্য আমি কোনো রূপের প্রলেপ (ঝড়সব ঢ়ৎবঃু ফবংরমহং) দিতে চেয়েছি, যাতে চেহারাটা অন্তত আস্ত বলে মনে হয়। এর নীতিকথা হলোঃ আপনার ভাষায় কখনো আমার হস্তক্ষেপ করা উচিত হয়নি। যা-ই হোক, আপনি রাজি থাকলে ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করা যাবে, আশা করি এখনো তার সময় আছে।’
চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা এক চিঠিতে (পত্রসংখ্যা ১০৭) রবীন্দ্রনাথ বলেন, “ইংরেজি ভাষায় বাংলা কবিতার অনুবাদ সম্বন্ধে আমার সংশয় ঘোচে না যেহেতু ইংরেজি ভাষার ঠিকমতো নাড়িজ্ঞান আমাদের হতেই পারে না। আধুনিক ইংরেজি কাব্যের অন্তরে বাহিরে নতুন যুগের মিস্ত্রি লেগেছে-এতই রূপান্তর হচ্ছে যে, তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া আমাদের দেশের কোনো কারিগরের পক্ষেই সম্ভব নয়।”
৬ জানুয়ারি ১৯৩৫ শ্রী অমিয় চক্রবর্তীকে লিখিত এক পত্রে রবীন্দ্রনাথ বলেন, “বাছুর মরে গেলে তার অভাবে গাভী যখন দুধ দিতে চায় না, তখন মরা বাছুরের চামড়াটা ছাড়িয়ে নিয়ে তার মধ্যে খড় ভর্ত্তি করে একটা কৃত্রিম মূর্ত্তি তৈরি করা হয়, তার গন্ধে এবং চেহারার সাদৃশ্যে গাভীর স্তনে দুগ্ধক্ষরণ হতে থাকে। তর্জ্জমা সেইরকম মরা বাছুরের মূর্ত্তি-তার আহ্বান নেই, ছলনা আছে। এ নিয়ে আমার মনে লজ্জা ও অনুতাপ জন্মায়। সাহিত্যে আমি যা কাজ করেছি তা যদি ক্ষণিক ও প্রাদেশিক না হয়, তবে যার গরজ সে যখন হোক আমার ভাষাতেই তার পরিচয় লাভ করবে।”
৭ই মার্চ ১৯৩৫ শ্রী অমিয় চক্রবর্তীকে লিখিত আর একটি পত্রে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘বুঝতে পারি ওরা যে-গ্রহের আমরা সে গ্রহের নই। যখন এ কথাটা সমপূর্ণ বুঝি তখন সমুদ্রের ওপারের খ্যাতিপ্রতিপত্তির জন্যে আমার আকাড়ক্ষা একেবারেই চলে যায়। এও মন বলে, ওদের ভাষা, ওদের প্রকাশের পদ্ধতি, ওদের ভালোমন্দর বোধ সম্বন্ধে সমপূর্ণ ধারণা আমার পক্ষে অসম্ভব। অতএব, তার মধ্যে অনধিকার প্রবেশের চেষ্টায় শুধু ব্যর্থতা নয়, অমর্য্যাদাও আছে। যেখানে আমার আপন অধিকার নিঃসংশয় সেইখানে ওদের থেকে দূরে থাকাই ভালো।-সমপ্রতি আমার তর্জ্জমাগুলো পড়ে কথাটা মনে আরো সুসপষ্ট হোলো। এ তো আমার লেখা নয়। নিজের এ পরিচয় কেনই বা দিতে যাওয়া-এ তো নিজেকে ব্যঙ্গ করা।’
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে লিখিত এক পত্রে রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘বাংলা ভাষায় আরবী ও পারসী সাহিত্যের অনুবাদ অবশ্য কর্তব্য তাতে আমার সন্দেহ নেই। যদি বিশ্বভারতীর অর্থদৈন্য কখনো দূর হয় তবে এ কাজে নিশ্চয় প্রবৃত্ত হব।
‘বিদেশী ভাষায় উচ্চ শ্রেণীর কাব্যগুলিকে পদ্যে অনুবাদ করার চেষ্টা বর্জ্জনীয় বলে আমি মনে করি। কবিতায় এক দিকে ভাবার্থ, আর এক দিকে ধ্বনির ইন্দ্রজাল। ভাবার্থকে ভাষান্তরিত করা চলে কিন্ত- ধ্বনির মোহকে এক ভাষা থেকে আর এক ভাষায় কোনোমতেই চালান করা যায় না। চেষ্টা করতে গেলে ভাবার্থের প্রতিও জুলুম করতে হয়। এই কারণেই পদ্যে আপনার হাফেজ অনুবাদ চেষ্টার আমি অনুমোদন করতে পারলেম না।’
জেটি শেফার্ড তাঁর গ্রিক ট্রাজেডি গ্রন্থে বলেন, ‘সফোক্লিসের ভাষায় প্রকৃতরূপের বিশ্লেষণ দুঃসাধ্য, অনুবাদ প্রায় অসম্ভব।’ সফোক্লিসের অনুবাদক ই এফ ওয়াটলিং বলেন, ‘গ্রিক বাগধারা এবং শব্দের ইংরেজি বিকল্পের ব্যবহার বেশ আয়াসসাধ্য, কাব্যে অপেক্ষাকৃত দুরূহ এবং নাটকে সবচেয়ে দুঃসাধ্য।’ ইস্কিলাস ও ইউরিপিডিসের অনুবাদক ফিলিপ ভ্যালাকট বলেন, ‘গ্রিক ট্র্যাজেডির প্রকৃষ্টতম অনুবাদ বর্জিত হবে তখনই, যখন পাঠক আমার অনুবাদটি আগুনে ছুড়ে ফেলে নিজেই ভাষাটি শেখার কাজে অভিনিবিষ্ট হবেন।’ এ রকম কথা অন্যান্য ভাষা সমপর্কেও বলা হয়েছে। বিশ্বে অনুবাদকর্ম থেমে নেই।
গ্যেটে, টলসটয়, কিয়ার্কেগাড, সারডান্টিস বা কালিদাস পড়ার জন্য পাঠককে জর্মন, রুশ, দিনেমার, সপ্যানিশ বা সংস্কৃত যদি পড়তেই হয়, তবে বেচারা এই সময় বাড়ন্ত যুগে অযথা বঞ্চিত হবে। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো ভালো।
ভাষা না জেনেও অনুবাদের অনুবাদও অনেক সময় তো হাতের গুণে রসোত্তীর্ণ হয় এবং হয়েছেও। অনেকের ধারণা, পরভাষার ধ্রুপদী সাহিত্যে বিশেষ গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় যুগে যুগে অনুবাদ করা ভালো। অনুবাদকর্মে যুগের হাওয়া খেলিয়ে দিতে পারলে তো প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হবে।
No comments:
Post a Comment